নমস্কার । দীর্ঘ তিনমাসের ব্যবধানে আবার এসেছি আমরা নতুন ভ্রমণকাহিনী নিয়ে । নানা কারণে গত কয়েকমাসেলেখা হয়নি সেভাবে । এমাস থেকে আবার প্রকাশ করব ভ্রমণকাহিনী নিয়মিত ভাবে । এই মাসে থাকবে তিব্বতের লাসার উপরে দেবাশিস দাশগুপ্তের লেখা ভ্রমণ কথা আর কানাডার রকি মাউন্টেন অঞ্চলের উপরে ধারাবাহিক চলতে থাকা ভ্রমণকাহিনীর শেষ পর্ব । লেখাটি পড়ে কেমন লাগল ইমেলে জানাতে ভুলবেন না জানি । ভালো থাকবেন ।
তীর্থ দাশগুপ্ত
travellertirtho@gmail.com
Author: তীর্থ দাশগুপ্ত (Page 1 of 4)
স্থান – লাসা
সময়- মে-জুন , ২০১৫ যাত্রীগণ – ভয়েজার্স ক্লাবের সহযাত্রীগণ
লেখা ও ফটো – দেবাশিস দাশগুপ্ত
সাংহাই হচ্ছে সমুদ্র পৃষ্ঠে আর লাসা হচ্ছে পৃথিবীর ছাদ – আমাদের পরিকল্পনা ছিল সাংহাই থেকে লাসা এই দীর্ঘ ৪৩০০ কিলোমিটার যাত্রা পথ আমরা পৃথিবীর সর্বোচ্চ রেলপথ যা কিনা কিংহাই-তিব্বত রেলপথ নামে পরিচিত তাতে পাড়ি দেব। এই দীর্ঘ সময়ে অর্থাৎ প্রায় ৪৮ ঘণ্টায় আমরা ধীরে ধীরে এই অধিক উচ্চতা জনিত সমস্যার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারব, যার ফলে আমরা লাসা পৌঁছে শারীরিক ভাবে সুস্থই থাকব। আরও একটা ব্যাপার ছিল – যাওয়ার সময় ট্রেনে গেলে কিছু কিছু প্রাকৃতিক দৃশ্য যেমন কুনলুন পর্বত শ্রেণী, গোবি মরুভুমি এসব দিনের আলোতে দেখতে পারতাম। কিন্তু বিধি বাম- ট্রেনে যাবার টিকিট না পাওয়ায় আমরা প্লেনে গিয়ে ট্রেনে ফিরব ঠিক হলো।
Continue readingBy Urja Dasgupta
Age 8 years
On the occasion of the traditional festival of West Bengal, “ Durga Puja “ , we decided to go to Tajpur for a trip…
I was eagerly waiting for the day when I will go to Tajpur with my parents, grandparents and my paternal aunt. The day before Puja, we packed all our pretty clothes, our favourite snacks and our other important materials.
The next day my mind was thrilled!! We dressed up and walked to the car. In the middle of our journey, we took a breakfast break and then continued our journey…
Continue readingনমস্কার
এক্সটিক বং ফ্যামিলি ট্র্যাভেলর সাইটে আপনাদের স্বাগত । নতুন নতুন ভ্রমণ গল্প আশা করি আপনাদের ভালো লাগছে। এই মাস থেকে শুরু করা হল “ছোটদের পাতা “ । ভ্রমণ শুধু বড়দেরই নয় , ছোটদের মনের উপরেও যথেষ্ট ছাপ ফেলে । নতুন নতুন জায়গায় বেড়ানো , নতুন নতুন দেশ, সেখানকার পশুপাখী , মানুষজন ইত্যাদি সম্বন্ধে ছোটদের কৌতূহল বাড়ায় । জানার ইচ্ছা জাগে । ছোটরা তাদের মত করে অভিজ্ঞতা লাভ করে । আমরা চাই ছোটরাও তাদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা লিখে আমাদের পাঠাক । ইতিমধ্যেই exotic bong family traveler নামে আমাদের ফেসবুক গ্রুপ চালু হয়েছে । অনুরোধ করব আপনারা সেই গ্রুপের সদস্য হন। ভ্রমণকাহিনী সেখানে পাঠান , সাথে ভালো ছবি। বিশেষভাবে মনোজ্ঞ ভ্রমণকাহিনী এই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করব । ছোটরাও পাঠাক তাদের লেখা বেড়াবার গল্প । চাইব বাংলায় লিখুক তারা । তবে ইংরেজি তেও কিছু লেখা চলতে পারে। আরো ভালো হয় ছোটরা যদি সাথে নিজের হাতে আঁকা দুই একটি ছবিও পাঠায় বেড়ানো সংক্রান্ত । অভিভাবক দের কাছে অনুরোধ তারা যদি ছোটদের এই বিষয়ে উৎসাহিত করেন তো খুব ভালো হয়। আপনাদের আরো কোন মতামত থাকলে লিখে পাঠান travellertirtho@gmail,com এ ।“ ছোটদের পাতার” প্রথম সংখ্যায় তৃতীয় শ্রেণীতে পাঠরত উর্যা দাশগুপ্ত ইংরেজিতে লিখেছে তাজপুরে বেড়ানো নিয়ে । ছোটদের লেখা বেড়াবার গল্প আরো চাই । পাঠান exotic bong family traveler ফেসবুক গ্রুপে । ইমেল ও করতে পারেন ।
ধন্যবাদ
তীর্থ দাশগুপ্ত
© লেখা ও ছবি – অরূপ দাশগুপ্ত
অরিত্ররা তিন ভাই। অরিত্র ছোট। দাদারা দুজনে পড়াশোনায় তুখোড় হলেও অরিত্র বরাবর একটু অমনোযোগী আর ফাঁকিবাজধরনের।স্কুলে কোনোদিনই খুব একটা ভালো রেজাল্ট করতে পারতো না অরিত্র। সব আশা ত্যাগ করে অরিত্রর আর কিছু হবে না ধরে নিয়ে অরিত্রর বাবা ওকে হায়ারসেকেন্ডারীর পর কম্পিউটার নিয়ে পড়তে বললেন। আশা, যদি পাশ করে অন্তত কোথাও একটা চাকরী পায়।
অরিত্রর কেরিয়ার কিন্তু মোটেই খারাপ হয়নি। সম্পূর্ণ নিজের যোগ্যতায় বি এস সির পর এম সি এ করে শেষে এম টেক কমপ্লিট করে অরিত্র। প্রথমে বছরখানেক দুএকটা কলেজে পার্টটাইম পড়াবার পর স্লেট কোয়ালিফাই করে এখন উত্তর কলকাতায় একটা কলেজে কম্পিউটার সায়েন্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। মাস তিনেক হলো অরিত্র বিয়েও করেছে।
অরিত্রর বউটি, টোড়ি, ভারী শান্ত! নিজেও স্লেট কোয়ালিফাই করে একটা কলেজে ইতিহাসের ফুলটাইম টিচার। তাসত্বেও সবসময় কেমন একটা সুগৃহিনী হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা টোড়ির।
কলেজে ছুটি না পাওয়ায় এখনও অরিত্ররা কোথাও বেড়াতেও যেতে পারেনি।
Continue readingদেখতে দেখতে আমাদের ভ্রমণ ব্লগ exoticbongfamilytraveller.com এক বছর পার করে এলো । গতবছর জানুয়ারী মাসে উইকেন্ড স্পট সিঙ্গিগ্রাম এবং বিদেশ ভ্রমণের গল্প হিসেবে রাশিয়ার উপরে লেখা নিয়ে আমাদের উদ্বোধন সংখ্যা প্রকাশিত হয় । তারপর থেকে প্রতিমাসেই দুটো তিনটি নতুন নতুন ভ্রমণ গল্প নিয়ে এই ব্লগ এগোতে থাকে । প্রতিটি লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর আপনাদের সুচিন্তিত মতামত পেয়ে আমরা ধন্য । পাঠকের ভাল লাগাই যেকোনো লেখকের পরম প্রাপ্তি ।খুব আশা করব , যদি এই ভ্রমণকাহিনী গুলি আপনাদের বন্ধু বান্ধব , আত্মীয় পরিজনদের মধ্যে ছড়িয়ে দেন ।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য যে গত মাসেই বলেছিলাম আমাদের এই ব্লগে আপনাদের নিজেদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা গল্পের আকারে আমাদের লিখে পাঠান , সাথে ভাল কিছু ছবি । ভালো লেখা ছবি সহ প্রকাশ করতে পারলে আমাদের খুব ভালো লাগবে । খুব ই আনন্দের সাথে জানাই ব্লগের এক বছর পূর্তিতে এই মাসের সংখ্যায়ে আমার জামাইবাবু ( পিসতুতো) শ্রী অরূপ দাশগুপ্তের লেখা ভ্রমণকাহিনী “ রাবন রাজার দেশে” প্রকাশিত হল ।এছাড়া এই মাসেই প্রকাশিত হবে সদ্য সমাপ্ত সিমলিপাল ভ্রমণের উপরে লেখা কাহিনী , যার পূর্বকথা গত মাসেই প্রকাশিত হয়েছে । ইতিমধ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পরেছে সমস্ত দেশে । তাই বাড়ী বসে এই ব্লগ পড়ে মনে মনে দেশ বিদেশ ঘুরে আসুন । আতঙ্কিত হবেন না, সতর্ক থাকুন । করোনা বিধি মেনে চলুন আর নির্দিষ্ট সময়ে টীকা নিন । ও হ্যাঁ অবশ্যই আপনাদের বেড়াবার গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না । আমাদের ইমেল আইডি – travellertirtho@gmail.com
সুস্থ থাকুন , ভালো থাকুন
ধন্যবাদ
তীর্থ দাশগুপ্ত
সময়– মে ২০১৮ যাত্রীগণ – দেবাশিস দাশগুপ্ত ও মনিদীপা দাশগুপ্ত
লেখা ও ফটো – দেবাশিস দাশগুপ্ত
স্থান – কিন্তামনি, উবুদ, কুটা, উলুওয়াতু, দেনপাসার, তানা লট
This is a travelogue in Bengali about Bali, Indonesia. Bali is unique, Bali is unmatched, a magical blend of culture, nature, activities, weather, culinary delights and above all the beautiful people of this island. Bali is rated as one of the best travel destinations in the world by countless websites, review portals, and travel magazines – for very good reasons. Whatever is your age, background, budget or interest, there is something great for everyone to explore and discover in Bali
গরুড় এয়ারলাইন্সের ছোট ফ্লাইটে যোগজাকার্তা থেকে বালির ডেনপাসারে এসে পৌঁছলাম।আকাশ পথে বালির প্রবেশদ্বার নগুরাহ রাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। মালপত্র নিয়ে বহির্দ্বার দিয়ে বেরোতেই দেখলাম আমাদের গাইড ফ্রেডি প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
Continue readingলেখা- তীর্থ দাশগুপ্ত
আসন্ন বড়দিন ও নিউইয়ার উপলক্ষ্যে বর্ষশেষের ছুটি কাটাতে পশ্চিমবাংলার পাহাড় , জঙ্গল , সমূদ্রতটে মানুষের ঢল নামছে । দীর্ঘ লোকডাউন জনিত ক্লান্তি ও অবসাদ কাটাতে মানুষ বেড়িয়ে পরছে । পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর যেমন পর্যটন , বন , মৎস্য দপ্তর বা পি ডব্লিউ ডিপার্টমেন্ট অধীনস্থ বিভিন্ন বাংলোগুলির বুকিং একদম শেষ । সরকারী বাংলো গুলি উৎসাহী পর্যটকদের কাছে সবসময়ে আকর্ষণীয় তার মূল কারণ এগুলির অবস্থান । যেকোনো টুরিস্ট স্পটের সবচেয়ে সেরা জায়গা তেই সরকারী বাংলোগুলি অবস্থান করে । বুকিং পদ্ধতিও আজকাল বেশ সোজা । সরাসরি নির্দিষ্ট দপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে বুক করা যায়। এছাড়াও এবারে পর্যটকদের সব চেয়ে পছন্দের তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন অল্পচেনা জায়গায় homestay । করোনা পরিস্থিতে বেশী ভীড় জায়গায় না গিয়ে ঘরোয়া পরিবেশে কম লোকের মধ্যে homestay গুলিতে থাকতে মানুষ বেশী পছন্দ করেছন । বেশ কয়েকবছর আগে আমরাও এরকম শীতে সিঙ্গিগ্রামে এক homestay তে থেকেছিলাম । exotic bong family traveller এর প্রথম সংখ্যায় গতবছর জানুয়ারীতে সেই ভ্রমনকথা প্রকাশ ও করা হয় ।
এ বছরে অবশ্য আমরা যাচ্ছি পাশের রাজ্য উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপাল অরণ্যে । সেই ভ্রমণের পুর্বকথা আগেই প্রকাশ করেছি । মূল কাহিনী ঘুরে এসেই প্রকাশ করব । আপনারাও নিশ্চয়ই কোথাও যাচ্ছেন ? পাঠান না আমাদের কাছে আপনাদের ভ্রমণ গল্প , সাথে ভালো কিছু ছবি । পাঠান ইমেল করে travellertirtho@gmail. com এ । আপনাদের ভালো লেখা , বেড়ানোর গল্প ছবিসহ প্রকাশ করব । ভ্রমণের আনন্দের মতন ভ্রমণ কথা শোনানো বা সুন্দর করে লিপিবদ্ধ করাতেও ততোধিক আনন্দ । কি বলেন আপনারা ?
সকলে ভালো থাকুন , সুস্থ থাকুন ।
ধন্যবাদ
তীর্থ দাশগুপ্ত
travellertirtho@gmail. com
লেখা- তীর্থ দাশগুপ্ত
জঙ্গল আমার অতি প্রিয় গন্তব্য । অরণ্য প্রকৃতির রূপ রস গন্ধ স্পর্শ আমাকে ছোটবেলা থেকেই টানে । অনেকের ই টানে , আমার মতন যারা জঙ্গলবিলাসী ও জঙ্গলপ্রেমী । সুযোগ পেলেই তাই ইচ্ছা হয় দুদন্ড প্রকৃতির কোলে কাটিয়ে আসি । নগরজীবনের যাঁতাকলে , নানাবিধ স্ট্রেসের থেকে মুক্তির একটা অন্যতম পথ নিষ্কলুষ প্রকৃতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়া । এই অরণ্য প্রীতি অনেকটাই এসেছে বিখ্যাত সাহিত্যিক শ্রী বুদ্ধদেব গুহর অগণিত লেখা পড়ে । আমি যে ওনার একনিষ্ঠ ভক্ত এবং আমার মতন অগণিত পাঠক পাঠিকা ,তা এর আগে কয়েকটি লেখায় আমি আগেই বলেছি । শেষ জীবনে ওনার সাথে ফোনালাপ হয় । সেই নিয়মিত আলাপচারিতা করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে দ্বিতীয়বার ভর্তির কয়েকদিন আগে পর্যন্ত চলেছিল ।
মনে আছে একদম প্রথম ফোনেই দাদা বলেছিলেন সিমলিপাল যাবার কথা । দেশ বিদেশের সব অরণ্যের মধ্যে সিমলিপালের মোহিনী রূপের আকর্ষণ সব চেয়ে বেশী ছিল ওনার কাছে এটাও বলেছিলেন । ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে যাবার সাহস হয়না বলাতে বলেছিলেন ” বেপাড়ার সুন্দরী মেয়ে কে চুমু খেয়ে এলে সেপাড়ার জোয়ানেরা কি ঠ্যাঙাবে নাকি মালা দেবে ? “
সিমলিপাল হল ভয়ঙ্কর সুন্দরী । এর পর ওনার ই লেখা “অন্য চোখে ” বইতে ” ভয়ঙ্কর সুন্দরী “লেখা পড়ে আরো ধারণা হয় । আস্তে আস্তে খোঁজ নিয়ে দেখি যে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব ওখানে এখন অনেকটাই কমেছে । তাই সাহসে ভর করে এই বছরের বর্ষশেষে আমার ও আমার বাল্য বন্ধুর পরিবার চারদিনের সিমলিপাল অরণ্য ভ্রমণের পরিকল্পনা করলাম ।
এই লেখাটি সেই ভ্রমণের পূর্ব কথা ।
জঙ্গল ভ্রমণ ঠিক আর পাঁচটা টুরের মতন নয় ।
1) ফরেস্ট বাংলো তে থাকতে হয় যেখানে সবরকম স্বাচ্ছন্দ্য নেই হোটেলের মতন। বিদ্যুৎ নেই । তাই সন্ধ্যের পর অন্ধকারে বিশেষ কিছু করার থাকেনা . তবে ফরেস্ট বাংলোর ব্যালকনি তে বসে রাতের জঙ্গলের শোভা অনুভব করতে বেশ লাগে । চুপ করে বসে থাকলে কতরকম আওয়াজ শোনা যায় । নানান গন্ধ নাকে আসে । সব মিলিয়ে এই আদিম পরিবেশ যাদের ভালো লাগে, অরণ্য ভ্রমণ তাদের টানবেই এটা বলতে পারি ।
2) সাজগোজের বাহুল্য অরণ্য ভ্রমণে চলেনা । লাল বা উত্তেজক কোনো রঙের পোশাক পরা চলেনা । কারণ জীবজন্তুরা উত্তেজিত হয়ে যেতে পারে ।সবুজ , মেটে রং বা কোনো হালকা রঙের পোশাক চলে যাতে প্রকৃতির সাথে বেশ মানিয়ে যায় ।
3) বেশী উত্তেজক সেন্ট বা পারফিউম মাখা যায়না । এমন ও শুনেছি খুব কড়া পারফিউম গায়ে মাখাতে মৌমাছিরা ঘিরে ধরে এবং তাদের বিষদংশনে আহত হন কেউ কেউ ।
4) সেলফির পেছনে না ছুটে যতটা সম্ভব প্রকৃতির অনবদ্য শোভা ক্যামেরাবন্দি করতে হয় , বেশিটাই মনের ক্যামেরায় ।
5) পঞ্চয়ন্দ্রিয় কে খুব তীক্ষ্ণ করে চোখ , কান , , নাক সবের অনুভূতি নিয়ে সম্পুর্ন ভালো লাগায় কটাদিন কাটিয়ে আসতে হয় ।
6) নিজেদের মধ্যে বেশী কথা বলতে হয়না । তাতে প্রকৃতি র কথা শোনা যায়না । মানুষের কথাতেই সব চাপা পরে যায় । শহর জীবনে তো শুধুই শব্দ , বেশিটাই অনাবশ্যক । অরণ্য ভ্রমণে যাওয়া তো আসলে নিশব্দতার বাঙময়তা অনুভব করতে ।
তা যারা আমার বক্তব্যের সাথে একমত তাঁরাই পারবেন সম্পুর্ন প্রকৃতিকে অনুধাবন করতে ।
আমাদের কর্তব্য পরবর্তী প্রজন্ম কে মাঝে মাঝেই এই প্রকৃতির সাথে সম্পৃক্ত হতে শেখানো ।
সিমলিপাল একসময়ে ছিল ময়ূরভঞ্জের রাজার hunting ground । দেশ স্বাধীন হওয়ার জাতীয় উদ্যান হয় । দেখা মেলে প্রচুর হাতি , মাউস ডিয়ার , সম্বর , গাউর, স্পটেড ডিয়ার , সজারু , ময়ূর , নানাবিধ পাখী যেমন রাকেট টেইল্ড drongo ইত্যাদি । নামেই টাইগার রিজার্ভ কিন্তু বাঘ কেউ দেখতে পায়না । বিভিন্ন এক্সটিক প্ল্যান্টের সমাহার শুনেছি এই জঙ্গলে । গাইডের থেকে সব চেনার ইচ্ছা রইলো । রয়েছে শাল , আম , জাম , সাহাজ, শিশু , বেল , বিজা বা পিয়াশাল , তেঁতুল । এছাড়া নানারকম লতা , গিলিরি , পুটুস ঝোপ ইত্যাদি। গাছ শুধুই গাছ নয় । তার ও নাম আছে, সৌন্দর্য আছে । এক এক ঋতুতে তার এক এক রকম শোভা আছে ।
বিভিন্ন রকম প্রজাপতি দেখতে পাওয়া যায় । ইচ্ছা রইল সেইগুলা দেখে মুগ্ধ হওয়ার ।
আর আছে প্রচুর ঝর্ণা ও জলপ্রপাত । নামগুলিও ভারী সুন্দর , যেমন জোরান্ডা , বরেহিপানি, উস্কি ইত্যাদি । এই জলপ্রপাত ও সংলগ্ন জঙ্গলের শোভা কিছুটা পায়ে হেঁটেই ঘুরব আমরা । সিমলিপালে পর্যটকরা পায়ে হেঁটে ঘুরতে পারেন , যা এর আগে করবেট ফরেস্টে পারিনি আমরা । জোরান্ডা নামের উৎস ও খুব ইন্টারেস্টিং । কথাটা এসেছে জাউ রান্ধা থেকে । জাউ মানে জিউ । অর্থাৎ অনেক আগে জগন্নাথ দেবের ভোগ মানে অন্ন এখানেই কাছে কোনো গ্রামে নাকি রান্না হত । জোরান্ডা ফরেস্ট বাংলোয় রাতে থাকলে জলপ্রপাতের দিকে নাকি বিচিত্র সব আলো দেখা যায় জ্বলতে নিভতে । শহুরে পরিবেশে এসব অতটা বিশ্বাসযোগ্য না হলেও সভ্যতা থেকে দূরে ওই পরিবেশে এই সব ক্রিয়াকলাপ মনের উপরে যথেষ্ট অভিঘাত ফেলে ।
বরেহিপানি জলপ্রপাতের দৃশ্য নাকি অতুলনীয় । বুড়িবালাম নদী এখন থেকেই নাকি উৎপন্ন হয়েছে ।
আরো সুন্দর সুন্দর জায়গার নাম শুনলাম , যেমন নুয়ানা আর চাহালা । নুয়ানা মানে ন আনা । ময়ূরভঞ্জের রাজা কে ন আনা ট্যাক্স দিতে হত সেই আমলে এখানকার অধিবাসীদের । আবার চাহালা মানে নাকি টলি গেলা । সেই আমলে একবার বিদেশী অতিথি দের নিয়ে রাজা এই চাহালার জঙ্গলে আসেন ও কিছু অতিপ্রাকৃত ঘটনার সাক্ষী হন । অতিথিদের মধ্যে কারুর প্রাণহানিও হয় । চাহালা বাংলোর সামনে একটি বড় পিয়াশাল গাছ আছে । সেটি নাকি কুরুল দিয়ে যেই কাটতে যায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় । এই সমস্ত নানা গল্প এখানে প্রচলিত আছে । লোকালয় থেকে বহু ভিতরে , আদিম বিদ্যুৎ হীন পরিবেশে , রাতের নিঝুম পরিবেশে বাংলোর হাতায় বসে এই সমস্ত গল্প স্থানীয় মানুষজন বা আমাদের গাইডের ( তিনিও স্থানীয় ) মুখে শুনতে বেশ লাগবে আশাকরি ।
স্থানীয় মানুষজন বা আদিবাসীদের বাদ দিয়ে কোনো অরণ্য প্রকৃতিই সম্পূর্ণতা পায়না । ওঁরাও , মুন্ডা ইত্যাদি আদিবাসীদের বাস জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় । এছাড়া আছে বাথুরি সমাজ । এখানকার আদি অধিবাসী । পুজো করে তারা বরামদেও বা জঙ্গলের দেবতার । যেমন সুন্দরবনে দক্ষিণরায় বা বনবিবি । এদের গ্রাম , লোকাচার , গ্জীবনযাত্রা ,ইত্যাদি চাক্ষুষ করার ইচ্ছা রইল । প্রকৃত ভারতবাসী তো এরাই । এতদিন দাদার মানে শ্রী বুদ্ধদেব গুহর লেখা পড়ে মনে মনে এই অপরূপ প্রকৃতির যে ছবি এঁকেছি তা চাক্ষুষ করার সুযোগ হবে এটা ভেবেই আমার উত্তেজনার শেষ নেই । আমার ভ্রমণ সাথীরাও যথেষ্ট excited আশা করি ।
বাকি ভ্রমণ কথা বেড়িয়ে এসেই পরিবেশন করব ।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পর্যটকদের দের জন্যে খুলে দিয়েছে তাদের দেশ দীর্ঘ কোভিড জনিত বিরতির পর । টুরিস্ট ভিসার আবেদন করা যাচ্ছে স্থানীয় মার্কিন কনস্যুলেট থেকে । ডাবল ভ্যাক্সিনেশান সার্টিফিকেট থাকাটা বাধ্যতামূলক । আগামী ভ্রমণের গন্তব্য হিসেবে মার্কিন দেশ কে বেছে নিতে পারেন । আসুন দেখে নি এতবড় একটা দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বড় শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের ভিত্তিতে কোন কোন যায়গা অবশ্য গন্তব্য । ভ্রমন সংক্রান্ত বিখ্যাত লোনলি প্ল্যানেট ম্যগাজিন নিম্নলিখিত পর্যটনস্থলগুলি অবশ্য গন্তব্য তালিকায় রেখেছে ।
Continue reading