সময়- জুন-জুলাই ২০০৬ যাত্রীগণ – দেবাশিস দাশগুপ্ত ও অফিসের সহকর্মীরা
লেখা ও ফটো – দেবাশিস দাশগুপ্ত
স্থান – সারায়েভো, জেনিচা, ত্রাভনিক, মোস্তার ও ভিসোকো
শেষ পর্ব
আমাদের প্রথম যাত্রা রাজধানী সারায়েভো। সারায়েভোর ইতিহাস বহু প্রাচীন – আগেই বলেছি। প্রথম মহাযুদ্ধের যে দাবানল সারা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছিল তার স্ফুলিঙ্গ ছিল এই সারায়েভো। বসনিয়ার জনগন তখন অস্ট্রিয়ার শাসনে অসন্তুষ্ট ও বিক্ষুব্ধ হয়ে সার্বিয়ার সঙ্গে সংযুক্তিকরণ চাইছিল। সার্বিয়ার সৈন্য বাহিনীর চক্রান্তে ২৮শে জুন, ১৯১৪ খ্রীস্টাব্দে অস্ট্রো-হাঙ্গারীয় সাম্রাজ্যের ভাবী উত্তরাধিকারী প্রিন্স ফার্দিনান্দ ও প্রিন্সেস সোফিয়া আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারাল এই সারায়েভোতেই। এই ঘটনা থেকেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত। মিলজাস্কা নদীর ওপরে যে সাঁকোর কাছে এই ঘটনা ঘটেছিল তার নাম ফার্দিনান্দ ব্রিজ। সেই ব্রিজের উপরে এক পাথরের ফলকে লেখা বিবরণ থেকে এই ঘটনা জানতে পারলাম।
এখানে শহরের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়লো আর এক স্মৃতিসৌধ এবং আগুনের চিরন্তন শিখা যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুগোস্লাভ শহীদ এবং সারায়েভোর স্বাধীনতাকামীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছিলো। পাথরের গায়ে উৎকীর্ণ লেখা “গৌরবময় যুগোস্লাভ জাতীয় সেনাবাহিনীর বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, ক্রোয়েশিয়া, মন্টিনিগ্রো এবং সার্বিয়ান ব্রিগেডের যোদ্ধা এবং সারায়েভোর দেশপ্রেমিক সার্ব, মুসলিম এবং ক্রোয়েট সংগ্রামীদের সাহস এবং রক্ত ঝরানো যৌথ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে ১৯৪৫ সালের ৬ই এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বসনিয়া-হার্জেগোভিনার রাজধানী সারায়েভো মুক্ত হয়েছিল -সারায়েভো এবং জন্মভূমির মুক্তির প্রথম বার্ষিকীতে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার গৌরব এই আত্মত্যাগী বীরদের অবদান সারায়েভো কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করে।“
ভাগ্যের কি নিদারুণ পরিহাস যে সার্বিয়ার সঙ্গে সংযুক্তিকরণকে কেন্দ্র করে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ ঘটে গেল, সেই সার্বিয়ারই সৈন্য বাহিনী কয়েক দশক বাদে আরেক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে লিপ্ত হয়ে দীর্ঘ প্রায় তিন বছর (১৯৯২- ১৯৯৫) বসনিয়ার রাজধানীকে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। অস্ত্র ও খাদ্য দ্রব্যের অভাবে সারায়েভোর জনগণ হয় সে দেশ ছেড়ে পালাল, না হয় পাহাড়ে আত্মগোপন করে থাকা সার্ব স্নাইপারদের গুলিতে প্রাণ হারাল। নিরস্ত্র জনগনের কাছে যুদ্ধ ছিল এক তরফা- কোনও প্রতিরোধই তারা খাড়া করতে পারেনি, যার ফলে মাত্র তিন বছরে সারায়েভোর জন সংখ্যা এক ধাক্কায় দুই তৃতীয়াংশে নেমে এসেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এতো দীর্ঘ এবং রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম বোধহয় ইউরোপে আর ঘটেনি। দেওয়ালে যখন পিঠ ঠেকে যায় তখন কোনও না কোনও রাস্তা বেরিয়ে আসে। সারায়েভোর প্রতিরোধ বাহিনী পাহাড়ের মধ্যে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে গোপন পথ তৈরী করল। সেই গুপ্ত পথ ধরে বিদেশ থেকে এলো চোরাই অস্ত্রশস্ত্র এবং খাদ্যসামগ্রী। সারায়েভোর জনগন যারা কোনও ক্রমে তখনও বেঁচে ছিলো তাদের নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করল এই সুড়ঙ্গ। পাহাড়ের ঢালে দূর থেকে দেখতে পেলাম অনেকটা অংশ জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে সাদা সাদা স্মৃতি ফলক। এরাই সেই হতভাগ্য সারায়েভোর বাসিন্দারা যারা স্নাইপারদের অতর্কিত গুলির নিশানা হয়ে পাহাড়ের কোলে চির নিদ্রা মগ্ন।
ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমরা চললাম বসনা নদীর উৎস সন্ধানে। এখানে এসে নদীর স্নিগ্ধ জলের স্পর্শে মনটা অনেকটা শান্ত হল। সবুজ ঘাসে ঢাকা মাঠ – তার বুক চিরে নুড়ি পাথর বিছানো পথ বেয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি নদী। যদিও জায়গাটা এখানে একেবারেই সমতল। ছোটো ছোটো হাঁস জলে সাঁতরে বেড়াচ্ছে, টলটলে জলের নীচে নুড়ি গুলি স্পষ্ট দৃশ্যমান। পাহাড়ের একটা গুহা থেকে নদী সৃষ্টি হয়ে সামান্য নীচে জলপ্রপাত হয়ে আছড়ে পড়ছে। জায়গাটা বড়ই মনোরম। একটা সাঁকোর উপর দাঁড়িয়ে নদী ও জলপ্রপাতের এই সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করলাম মন ভরে।
পরের সপ্তাহে আমাদের দোভাষী ছেলেটির ব্যবস্থাপনায় আমরা ঠিক করলাম শহর থেকে অনেক দূরে পাহাড় ঘেরা এক ঐতিহাসিক শহর ত্রাভনিক দেখতে যাবো। এই ছেলেটির কথা আগেও উল্লেখ করেছি। একদিন ওর আমন্ত্রণে আমরা কয়েকজন ওর বাড়ী গিয়েছিলাম। সপ্তাহান্তে ওরা এখানে মিলিত হয়ে পুজোপাঠ করে। ওর মা ও কয়েকজন মহিলা আমাদের সাদরে অভ্যর্থনা করলেন।ওর পুজোর ঘরে দেখলাম শ্রীরামকৃষ্ণ, সারদা মা, স্বামী বিবেকানন্দ ও ওর গুরুজীর ফটো। ও ধুতি পরে গায়ে চাদর জড়িয়ে মা কালীর ফটোর সামনে নিষ্ঠা ভরে পূজো করলো – ওর মা আমাদের প্রসাদ দিলেন। দেশ থেকে এতো দূরে এইরকম অভিজ্ঞতা আমাদের কাছে এক বিরাট প্রাপ্তি। আমরা আসবো শুনে সারায়েভো থেকে এক মহিলা এসেছিলেন নৃত্য পরিবেশনা করতে। তিনি ভারতনাট্যম নৃত্য পরিবেশনা করলেন । অসাধারণ পরিবেশনা – কোন অংশে আমাদের দেশের শিল্পীদের থেকে কম নয়। পরে শুনলাম তিনি ভারতে থেকে দীর্ঘ তিন বছর ধরে নৃত্য শিক্ষা অনুশীলন করেছিলেন। ভারতের ধর্ম, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতি এঁদের আগ্রহ আমাদের অভিভূত করেছে। এদের আতিথেয়তা আমাদের আপ্লুত করেছে।
এবার ত্রাভনিকের প্রসঙ্গে আসছি। ত্রাভনিক শহরের ইতিহাসও অনেক প্রাচীন।মধ্য বসনিয়ার পাহাড় ঘেরা উপত্যকায় এই শহরের পত্তন হয়েছিল তুর্কীদের শাসন কালে। তুর্কীরা বলকান অঞ্চল দখল করে প্রায় ১৫০ বছর ধরে যখন এই দেশ শাসন করছিল তখন সুলতানের উজির বা গভর্নর ওখানে থাকতেন। ব্যবসা ও হস্তশিল্পের পীঠস্থান ছিল এই জায়গা। পরবর্তী কালে যখন বসনিয়া অস্ট্রো-হাঙ্গারীয়ান সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে তখন অটোম্যান সাম্রাজ্যের সময়কার স্থাপিত অনেক মসজিদ, স্কুল তারা দখল করে নেয়। ত্রাভনিক তখন শিল্পনগরী এবং ব্যবসার কেন্দ্র হয়ে ওঠে। কাঠের কাজ এবং তন্তুজ বস্ত্রের কারখানার জন্য এই স্থান বিখ্যাত ছিল। এখানে পঞ্চদশ শতাব্দীর তৈরী একটা দুর্গ দেখার মত – উঁচু মিনার, গম্বুজ ও দেওয়াল সবই পাথরের। ভেতরে ঢোকার একটাই মাত্র পথ। উঁচু পাহাড়ের উপর দুর্গ।
সেখান থেকে শহরটা খুবই সুন্দর দেখায় । দুর্গের মধ্যে ছোট্ট মিউজিয়াম – সেখানে রাখা আছে বহু প্রাচীন রোমান যুগে ব্যবহৃত পুরুষ ও মহিলাদের পোষাক পরিচ্ছদ, আসবাব, তৈজস পত্র ইত্যাদি। যেন মধ্য যুগে ফিরে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আবার ফিরে এলাম বর্তমানে – ড্রাইভার তাড়া দিচ্ছে, এখনই ফিরতে হবে। ত্রাভনিকের স্মৃতি সঙ্গে নিয়ে ফিরে এলাম জেনিচায়।
দেখতে দেখতে আমাদের ফেরার সময় এগিয়ে আসছে । একদিন আমাদের আর একজন দোভাষী সানালা বলল যে আপনারা যদি চান তো আমি আপনাদের একটা সুন্দর জায়গায় নিয়ে যেতে পারি। জায়গাটার নাম মোস্তার – জায়গাটায় আমি কয়েক বার গেছি, আপনাদের ভালো লাগবে আশা করি। এই মেয়েটি একটা স্কুলের ইংরেজীর শিক্ষিকা – এখন গ্রীষ্মবকাশে ও আমাদের জন্য দোভাষীর কাজ করছে। আমরা তো এক কথায় রাজী হয়ে গেলাম। মোস্তার জায়গাটা অনেক দূরে । আমাদের ফিরতে ফিরতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যাবে। পথে কি পাওয়া যাবে জানিনা , তাই আমরা লাঞ্চের প্যাকেট আর কিছু স্ন্যাক্স নিয়ে রওয়ানা হলাম সকাল সকাল। নেরেৎভা নদীর পাশ দিয়ে পাহাড়ী পথ বেয়ে এঁকে বেঁকে চলেছে রাস্তা – অসাধারণ সুন্দর সেই দৃশ্য – নীচে সবুজ আর নীল রঙে মেশানো নদী আর পাশে পাহাড়, মাঝে মাঝে দু একটা জনপদ।
দুপুর নাগাদ আমরা মোস্তারে এসে পৌঁছলাম। মোস্তার কথাটি এসেছে ‘মোস্ত’ (ব্রিজ) ‘স্তারি’ (পু্রোনো) থেকে – যার অর্থ পুরোনো ব্রিজ। এখন আর সেই পুরোনো ব্রিজ নেই – তার জায়গায় তৈরী হয়েছে নতুন ব্রিজ। গৃহযুদ্ধের সময় ক্রোয়েটরা এই ব্রিজ ধ্বংস করে দেয়। উদ্দেশ্য ছিলো পূর্ব দিকে বসবাসকারী মুসলমানদের বিচ্ছিন্ন করে রাখা । এখন এই ব্রিজ ট্যুরিস্টদের জন্য এক দর্শনীয় স্থান।
এই ব্রিজের ওপর থেকে অল্পবয়সী ছেলেরা সামান্য অর্থের বিনিময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্যুরিস্টদের মনোরঞ্জনের জন্য নীচের নদীতে ঝাঁপ দেয়। ব্রিজটা পেরোলে গলি রাস্তা – সেখানে গ্রামের লোকেরা তাদের হস্তশিল্পের পসরা সাজিয়ে বসেছে বিক্রীর আশায়। তামার এবং কাঠের ওপর খোদাই করা কাজ, পেন্টিং ইত্যাদি খুবই সুন্দর।এই মোস্তার শহরের একটা রাস্তা দেখিয়ে সানালা বলল যে এই রাস্তার এক দিকে ক্রোয়েটদের বাস এবং অন্যদিকে মুসলিমদের। তখনও কয়েকটা বাড়িতে দেখলাম বুলেটের ক্ষত।
মোস্তার থেকে ফেরার পথে আমরা একটা জায়গায় থামলাম। তার নাম ভিসোকো অর্থাৎ উঁচু জায়গা। সেখানে নাকি একটা প্রাচীন পিরামিডের সন্ধান পাওয়া গেছে। অনেকটা পাহাড়ি চড়াই পথ পেরিয়ে আমরা ওপরে পৌঁছলাম। পুরাতাত্ত্বিক বিভাগ ওখানে খননের কাজ চালিয়েছে। দেখে মনে হল পাথর নয়, কিছু নুড়ি পাথর, চুন এবং কিছু মর্টার জাতীয় জিনিস মিশিয়ে ঢালাই করে তৈরি করা হয়েছিল। কি উদ্দেশ্যে এবং কারা এখানে স্টেপ পিরামিডের মতো বিশাল এই জিনিস তৈরি করেছিল তা রহস্যাবৃতই থেকে গেছে।
ফেরার পথে গাড়ি বিভ্রাট। মাঝ পথে আমরা নেমে পড়লাম। সারায়েভো থেকে অন্য গাড়ি আনার ব্যবস্থা হল। আমরা রাস্তার ধারে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি। ইতিমধ্যে আমাদের মধ্যে একজন রাস্তার পাশে কাঁটাতারে ঘেরা ঝোপের মধ্যে থোকা থোকা ফলে থাকা স্ট্রবেরি দেখে সেদিকে যাচ্ছিল পাড়তে। সানালা হাঁ হাঁ করে উঠলো। বলল “ এখানে অজানা অচেনা জায়গায় মাঠে ঘাটে কখনো যাবার চেষ্টা করবেন না। যুদ্ধের সময় বিভিন্ন জায়গায় বহু মাইন পোঁতা হয়েছিল। তার সব এখনো উদ্ধার হয়নি। মাটিতে পোঁতা মাইন ফেটে এখানে অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে – কাজেই সাবধান থাকা উচিত।“ অবশেষে আর একটা গাড়ি এল আমাদের নিয়ে যেতে। ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গেল, তবে এখানে সন্ধ্যে হয় অনেক দেরীতে প্রায় রাত ন’টা নাগাদ।
পরের সপ্তাহে আমাদের দেশে ফেরার কথা……।এক মেঘলা ভোরে আমরা ফেরার যাত্রা শুরু করলাম। সারায়েভো বিমান বন্দর থেকে প্লেন উড়লো ভিয়েনার উদ্দেশ্যে।নীচে পড়ে রইলো বৃষ্টি ভেজা সারায়েভো। শহর ছাড়িয়ে প্লেন চলল গন্তব্য স্থলের উদ্দেশ্যে – নীচে পাহাড়ের সারি আর সবুজের সমারোহ। বিদায় বসনিয়া, বিদায় গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সেই দেশ –যে দেশের চল্লিশ লক্ষ মানুষের একটাই লক্ষ্য – স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়ানো , যেখানে থাকবেনা কোন বৈষম্য আর ভেদাভেদ, থাকবে সুস্থ ভাবে শান্তিতে বেঁচে থাকার অধিকার।
–
কিছু প্রয়োজনীয় তথ্যঃ
কেন যাবেন
প্রাক যুগোস্লাভিয়ার একটি প্রদেশ এবং বর্তমানে একটি সার্বভৌম্য রাষ্ট্র বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় যেমন আছে অনাবিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য তেমনি এর সুপ্রাচীন ইতিহাস । এখানকার পাহাড়ী অঞ্চলে উইন্টার অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের অনেক সাক্ষ্য বহন করে চলেছে এই দেশ।
কোন সময়ে যাবেন
জুন থেকে আগস্ট প্রশস্ত সময়
কি ভাবে যাবেন
দিল্লী থেকে ভিয়েনা হয়ে (অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইন্স) অথবা ইস্তাম্বুল হয়ে ( টার্কিশ এয়ারলাইন্স) সারায়েভো পর্যন্ত বিমান ভাড়া (যাতায়াত) আনুমানিক ৬০,০০০/-
কোথায় থাকবেন
স্থানীয় ট্যুর অপারেটর দ্বারা পরিচালিত ৬ দিনের ট্যুর (থাকা খাওয়া সমেত) আনুমানিক খরচ ৭০,০০০/-
কয়েকটি স্থানীয় ট্যুর অপারেটরের নাম (সারায়েভোতে অফিস) নীচে সংযোজিত হলঃ
Exodus Travels, Intrepid Travels, Balkan Tour, Bosnia at its Best
Leave a Reply